- Home
- রসায়নের জন্মকথন
রসায়ন শব্দের ইংরেজি শব্দ Chemistry (কেমিস্ট্রি)। মধ্যযুগে পরশ পাথরের সন্ধানে পরীক্ষারত মুসলিম বিজ্ঞানীরা একটি শাস্ত্র বা পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এটাকে তারা বলতেন আলকামিস্তা বা আলকেমি। আলকেমি এসেছে আরবী শব্দ আল-কিমিয়া থেকে। আল-কিমিয়া শব্দটি এসেছে ‘কিমি’ থেকে পরবর্তীতে যার থেকেই chemistry শব্দের উৎপত্তি।
খ্রীস্টপূর্ব ১০০০ বছরেরও পূর্বে প্রাচীন সভ্যতার মানুষ যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করতো, তার থেকেই পরবর্তিতে রসায়নের বিভিন্ন মৌলিক শাখা গঠন। আকরিক থেকে ধাতু নিষ্কাশন, মৃৎশিল্প নির্মাণ, ধাতুর প্রলেপন, মদ তৈরি, প্রসাধনী ও রঙের জন্য রঞ্জক পদার্থ তৈরি, উদ্ভিদ থেকে রাসায়নিক পদার্থ আহরণ এবং তা দিয়ে সুগন্ধি ও ঔষধ তৈরি, পনির তৈরি, কাপড়ের রঙ, চামড়া সংরক্ষণ, চর্বি হতে সাবান উৎপাদন উত্যাদি নানা প্রকার পদ্ধতি প্রাচীন সভ্যতার মানুষ অবলম্বন করতো।
পদার্থের প্রকৃতি ও রূপান্তর সম্বন্ধে দার্শনিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এছাড়া আলকেমির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও ভুল প্রমাণিত হল।রবার্ট বয়েলের অনুসন্ধান ও গবেষণার ফলে যখন আলকেমি এবং রসায়নের মধ্যে সতন্ত্র পার্থক্য সূচিত হয় তখন থেকেই আধুনিক রসায়নের উদ্ভব ঘটতে শুরু করে। রসায়ন বিজ্ঞানের একটি পূর্ণাঙ্গ শাখায় পরিণত হয় যখন অ্যান্তনি ল্যাভয়শিয়ে ভরের নিত্যতা সূত্র আবিষ্কার করলেন। এই সূত্র রাসায়নিক ঘটনাবলির সূক্ষ পরিমাপ এবং পরিমাণগত পর্যবেক্ষণ ব্যাখ্যা করে। তাই যখন আলকেমি এবং রসায়ন কেবল পদার্থের প্রকৃতি ও রূপান্তর সম্বন্ধে আলোচনা করত তখন রসায়নবিদগণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে রসায়নের মৌলিক বিষয়াবলি উদ্ভাবনের চেষ্টা করত।
জাবির ইবনে হাইয়ান যিনি গিবর নামে ইংরেজদের কাছে সমধিক পরিচিত, একজন আরব/পারস্যীয় রসায়নবিদ, তাকে অনেকেই রসায়নশাস্ত্রের জনক অভিধায় ভূষিত করেন। তিনি রসায়নের প্রথম দিকের পরীক্ষামূলক পদ্ধতিগুলো আবিষ্কার করেন।